পোল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা 2024

পোল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা 2024

ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৬ষ্ঠ বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ হলো পোলান্ড। পোল্যান্ড একটি প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র। পোল্যান্ড ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যতম একটী গতিশীল অর্থনীতির রাষ্ট্র। ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে পোল্যান্ডে জব পাওয়া তুলনামুলক অনেক সহজ। তাই দিন দিন পোল্যান্ডে যাওয়ার প্রবনতা বেড়েই চলেছে। আর আপনিও যদি কাজের ভিসা নিয়ে পোল্যান্ডে যেতে চান, তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য অনেক গুরুত্বপুর্ন হতে চলেছে।

আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে খুব সহজেই কিভাবে কাজের ভিসার আবেদন করতে পারেন এবং পোল্যান্ড কিভাবে যাবেন আরো ইত্যাদি বিষয় সুন্দরভাবে তুলে ধরবো ইনশাআল্লাহ। তাই মনোযোগ এবং গুরুত্বসহকারে আর্টিকেল টি পড়লে পোল্যান্ড সম্পর্কে সকল তথ্য খুবই সুন্দরভাবে বুঝতে এবং জানতে পারবেন। তাহলে চলুন আর দেরি না করে চলে যাই বিস্তারিত আলোচনায়। 

বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার নিয়ম

বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ডে যেতে হলে অবশ্যই কিছু নিয়ম মেন অতঃপর যেতে হবে। নিন্মে বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যাওয়ার নিয়মগুলো উল্লেখ করা হলোঃ 
পোল্যান্ডে কাজের উদ্দেশ্যে যেতে হলে আপনাকে প্রথমে একটি কাজের ভিসার থাকতে হবে। আর পোল্যান্ডের কাজের ভিসাকে পোলিশ ন্যাশনাল ভিসাও বলা হয়। আর পোল্যান্ডে কাজের ধরন এবং সময়ের উপর ভিত্তি করে কাজে ভিসা কে পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয় এগুলো হলোঃ 
ওয়ার্ক পারমিট A – যদি আপনার কে নিয়োগকর্তা কোম্পানি থেকে পোল্যান্ডে চাকরির অফার থাকে তাহলে এই ধরনের ভিসা প্রদান করে থাকে। 
  • ওয়ার্ক পারমিট B – এই ধরনের ভিসা সাধারনত বোর্ডের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের প্রদান করা হয়। এবং এটির সময় কাল সর্বনিন্ম ৬ মাস হয়ে থাকে। 
  • ওয়ার্ক পারমিট C – যদি আপনি একজন প্রতিনিধি হিসেবে পোল্যান্ডে যান এবং ৩০ দিনের বেশি থাকেন এই ক্ষেত্রে আপনাকে এই ভিসা প্রদান করা হবে। 
  • ওয়ার্ক পারমিট D – আপনি যদি একজন প্রতিনিধি হন এবং আপনার কাজের সেক্টর যদি হয় এক্সপোর্ট সেক্টরে তাহলে আপনার ভিসার ধরন হবে ওয়ার্ক পারমিট ডি 
  • ওয়ার্ক পারমিট S – আপনি যদি কৃষিকাজের জন্য যান তাহলে আপনার ভিসা হবে ওয়ার্ক পারমিট এস। 
আপনার পছন্দ এবং যোগ্যতা অনুযায়ী একটি ভিসার জন্য আবেদন করবেন। অতঃপর ভিসা ফি এবং প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র জমা দিয়ে বাংলাদেশ থেকে পোল্যান্ড যেতে পারেন। 

পোল্যান্ড কি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা উন্মুক্ত

হ্যাঁ। পোল্যান্ডের সরকার সম্প্রতি তে বিদেশিদের জন্য একটি নতুন ভিসা মুক্ত ওয়ার্ক পারমিটের ব্যবস্থা করেছেন। তবে এইক্ষেত্রে অবশ্যই প্রবাসিদের বায়োমেট্রিক এবং পোলিশ ভিসা থাকতে হবে । আর এইটি শুধু মাত্র পাসপোর্টের ধরনের উভর ভিত্তি করেই সুযোগ দেওয়া হবে। 
তবে ভিসা মুক্ত ব্যবস্থার অধীনে পোল্যান্ডে প্রবেশকারী বিদেশী নাগরিকদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে তারা শুধু বৈধ বসবাসের সময়কালের জন্য মুক্ত ভিসাতে কাজ করতে পারবেন, অর্থাৎ ১৮০ দিনের সময়ের মধ্যে ৯০ দিনের বেশি নয়। তবে এই সময়ের পরে যারা কাজ করতে চান তাদের ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করতে হবে।

পোল্যান্ড কি এখন ওয়ার্ক পারমিট 2024 ইস্যু করছে

হ্যাঁ। পোল্যান্ড ২০২৩ সালে ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করেছে । এবং প্রবাসীদের জন্য আরো অনেক বেশি সুযোগ বৃদ্ধি করেছে। নিন্মে ২০২৩ সালের ইস্যু হওয়া কয়েকটি নিয়ম হলোঃ
 
  • প্রবাসীদের ভিসা মুক্তা ওয়ার্ক পারমিট ব্যবস্থা
  • দীর্ঘস্থায়ী ভিসার ভিত্তিতে বিদেশীদের সীমান্ত অতিক্রম করার বাধ্যবাধকতা
  • আগে ওয়ার্ক পারমিট ৬ মাস থেকে সর্বোচ্চ ১২ মাসের হতো তবে এখন সেটা ৩ বছর অব্দি করেছে। 
  • মৌসুমি কর্মীরা ৯ মাসের জন্য কাজ করতে পারবে। 

পোল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিট পাওয়া কি সহজ

পোল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়া একটু কঠিন । কারন পোল্যান্ড একটি জনসংখ্যা বহুল দেশ। তাই এই দেশের নাগরিকদের ভিরে ওয়ার্ক পারমিট পাওয়া একটু কষ্টসাধ্য। তবে আপনি যদি অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এবং ইংরেজিতে দক্ষ হতে পারেন তবে আপনার জন্য ওয়ার্ক পারমিট পাওয়া টা তুলনামুলক সহজ হবে। 

পোল্যান্ড ভিসা প্রসেসিং

পোল্যান্ড ভিসা প্রসেসিং এর ধাপ গুলো নিন্মে উল্লেখ করা হলো ঃ 
আপনি কোন ভিসাতে পোল্যান্ডে যেটা চান সেই ভিসার জন্য আবেদন করা 
  • একটি বৈধ পাসপোর্ট 
  • রঙ্গিন ছবি 
  • স্বাস্থ্য পরিক্ষার সনদ
  • সিভি/কাজের অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট
  • নিয়োগকর্তার নিকট হতে প্রাপ্ত নিয়োগপত্র
  • পোল্যান্ডের দুতাবাস এর উপর ভিত্তি করে কাগজ পত্রের পরিমান বাড়তে ও পারে। 
আপনার এই সকল প্রসিডিউর হয়ে গেলে আপনার ভিসা প্রসেসিং হতে সময় লাগবে প্রায় ৬ সপ্তাহের মতো। 

পোল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে

কাজের ধরন এবং ভিসার ধরনের উপর ভিত্তি করে ভিসা ফি পরিবর্তন হয়। নিন্মে পোল্যান্ডের ভিসা ফি গুলো উল্লেখ করা হলোঃ 
  • তিন মাসের কম কাজের ভিসা ফি ১১.০৫ ইউরো 
  • তিন মাসের বেশি কাজের ভিসা ফি ২২.১০ ইউরো 
  • কাজের ধরন যদি ডি টাইপের হয় তাহলে ভিসা ফি ৪৪.১৯ ইউরো 

পোল্যান্ড জব ভিসা

পোল্যান্ডের জবের ভিসা গুলো বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। তবে আপনার পোলিশ ওয়ার্ক পারমিট সর্বদাই আপনার নিয়োগকর্তার সাথে চুক্তি প্রর্যন্ত স্থায়ী হবে। উদাহরনস্বরুপ বলা যায়, যদি আপনার চুক্তি দুই বছরের হয় তাহলে আপনার ওয়ার্ক পারমিট ও দুই বছরের হবে। তবে এই ক্ষেত্রে আপনার ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ শেষ হবার ৩০ দিন আগে আবার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করতে পারবেন। 

পোল্যান্ড ভিজিট ভিসা

পোল্যান্ড ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৬ টি সেনজেনভুক্ত দেশগুলোর একটি। তাই আপনি সেখানে ৩ মাসের জন্য ভিজিট ভিসাতে যেতে পারেন এবং গিয়ে সেখানে কাজ ও করতে পারেন। পোল্যান্ডের স্বল্পমেয়াদি ভিসাকে শেনজেন ভিসা নামেও অভিহিত করা হয়। আপনি যদি ভিসিট ভিসার জন্য আবেদন করতে চান তাহলে আপনাকে সুইডেনের দুতাবাসের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। কারণ পোল্যান্ডের শেনজেনের ভিসার আবেদন সুইডেনের দূতাবাস থেকে করা হয়। 

পরিশীষ্ট 

আশা করি আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে পোল্যান্ডের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে সকল তথ্য বিস্তারিতভাবে বুঝতে পেরেছেন। তবে একটা অনুরোধ আপনারা যারা বিদেশ যাবেন তারা অবশ্যই যাবার পুর্বে বুঝে শুনে যে ভিসাটি আপনার জন্য ভালো হবে সেই ভিসাতে যাবেন। 
এবং যে এজেন্সির মাধ্যমে যাচ্ছেন সেই সম্পর্কে ভালো করে জেনে অতঃপর যাবেন কারণ অনেক ক্ষেত্রেই কাজের ভিসার নাম করে অনেক দালাল টুরিস্ট ভিসাতে বিদেশ পাঠিয়ে দেয়। সবাই ভাল থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।  

FAQ

পোল্যান্ড ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা? 

পোল্যান্ডের ১ টাকা বাংলাদেশের ২৪.৭২ টাকা। 

পোল্যান্ড সর্বনিম্ন বেতন কত?

পোল্যান্ডের সর্বনিম্ন বেতন ৩০১০ থেকে ৩৪৯০ পোলিশ জলুটি যা বাংলাদেশি টাকাতে ৭৪০০০ থেকে ৭৫১০০ টাকা। 

Post Comment

You May Have Missed