সিরাজউদ্দৌলা নাটক – সিরাজউদ্দৌলা নাটকের বিষয়বস্তু
আপনি কি সিরাজউদ্দৌলা নাটক সম্পর্কে জানতে চান? আজকের এই পোস্টে আমরা সিরাজউদ্দৌলা নাটক সম্পর্কে আলোচনা করব এর সাথে সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূল বিষয়বস্তু কি ছিল সে সম্পর্কে আপনাদের জানাবো। ছোটবেলায় আমরা অনেকেই সিরাজউদ্দৌলার নাটক দেখেছি। আজকে আবার আমরা সেই ছোটবেলায় ফিরে যাব। সিরাজউদ্দৌলা নাটক এবং সিরাজউদ্দৌলা নাটকের বিষয়বস্তু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
সিরাজউদ্দৌলা নাটক
প্রিয় পাঠক আজকে আমাদের আলোচনার মূল বিষয় হল সিরাজউদ্দৌলা নাটক। আমরা ছোটবেলায় অনেকেই সিরাজউদ্দৌলা নাটক দেখে থাকবো। হয়তো আমাদের এখন আবার সেই ছোটবেলার কথা মনে পড়েছে। তাই গুগলের সার্চ করে সিরাজউদ্দৌলা নাটক সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। আজকের এই আর্টিকেল আমরা সিরাজউদ্দৌলা নাটক সম্পর্কে বিভিন্ন রকম জানব।
পলাশীর যুদ্ধ কে কেন্দ্র করে সিরাজউদ্দৌলা নাটকটি লেখা হয়েছিল। সিরাজউদ্দৌলা নাটকটি প্রকাশিত হয় ১৯৬৫ সালের ডিসেম্বর মাসে। এ নাটকটির মূল বিষয় সাজানো হয়েছে ১৭৫৭ সালের পলাশী যুদ্ধের বাংলার তরুণ নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় ও পতন কে কেন্দ্র করে। তিনি এই নাটকের মধ্য দিয়ে বর্তমানকালের জীবনকে ইতিহাসের কাঠামোর মাঝে প্রতিস্থাপন করেছেন।
১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর প্রান্তর ইংরেজদের সঙ্গে নবাব সিরাজউদ্দৌলার যুদ্ধ শুরু হয়। এরপরে নবাবের কাছে একের পর এক সেনাপতির মৃত্যুসংবাদ আসতে থাকে। নবাবের নিকটস্থ কয়েকজন তাকে যুদ্ধ বন্ধ করার অনুরোধ জানান। তখন তারা বিজয়ের প্রান্তে। এসময় মির্জাপুর এবং রায়দর্লভ এর পরামর্শের যুদ্ধ বন্ধ করার ঘোষণা দিয়ে মুর্শিদাবাদ রওনা করেন।
সাধারণত সিরাজউদ্দৌলা নাটক এই প্ল্যাটফর্ম অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছে। আশা করি আপনারা সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়লে সিরাজউদ্দৌলা নাটক সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাহলে চলুন এখন আমরা সিরাজউদ্দৌলা নাটক সম্পর্কে আরো কিছু তথ্য জেনে নেই।
সিরাজউদ্দৌলা নাটকের লেখক কে
যিনি আমাদের এত সুন্দর নাটক উপহার দিয়েছেন তাকে তো অবশ্যই মনে রাখতে হবে। একসময় সিরাজউদ্দৌলা নাটকটি অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল বাংলা জনগণের কাছে। বিশেষ করে নব্বইয়ের দশকের দিকে এই নাটকটি বেশি জনপ্রিয় ছিল। যাদের ঘরে টিভি ছিল তারা এ নাটকটি দেখেছেন। এই নাটকটি এখনও বাংলার জনগণের মনে দাগ কেটে আছে।
সিরাজউদ্দৌলা নাটকের লেখক কে সম্পর্কে অবশ্যই আপনার জানা উচিত। সিরাজউদ্দৌলা নাটকের লেখক হলেন সিকান্দার আবু জাফর। সিকান্দার আবু জাফর মাসিক সমকাল পত্রিকা সম্পাদনা করে স্মরণীয় হয়ে আছেন। সিকান্দার আবু জাফরের পেশা ছিল সাংবাদিকতা।
সিরাজউদ্দৌলা নাটকের চরিত্র কয়টি
প্রিয় পাঠক এই পোস্টে আমরা সিরাজউদ্দৌলা নাটক নিয়ে আলোচনা করছি। আমরা ইতিমধ্যেই সিরাজউদ্দৌলা নাটক নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে পেরেছি। এখন আমরা আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সিরাজউদ্দৌলা নাটকের চরিত্র কয়টি ছিল এ বিষয় সম্পর্কে জানব। সিরাজউদ্দৌলা নাটকের চরিত্র সংখ্যা ছিল ৩৯ টি।
নবাব সিরাজউদ্দৌলার কবর কোথায়
খোশবাগ হলো ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের ভাগীরথী নদীর পশ্চিম তীরে এক মাইল দূরে অবস্থিত। এখানেই বাংলার তরুণ নবাব এবং তার পরিবারের সদস্যদের কবরস্থান অবস্থিত। এখানে নবাব সিরাজউদ্দৌলা তার স্ত্রী বেগম লুৎফুন্নেসা, নবাব আলীবর্দী খাঁ ও তার মায়ের কবর স্থানে অবস্থিত। বাংলার প্রথম নবাব আলীবর্দী খাঁ নির্মাণ করেন এ বাগানটি। এখানে সিরাজউদ্দৌলা পরিবারের মোট ৩৪ জন সদস্যের কবর রয়েছে।
আশা করি নবাব সিরাজউদ্দৌলার কবর কোথায় অবস্থিত এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন। এখন আমরা সিরাজউদ্দৌলা নাটক সম্পর্কে আরো অনেকগুলো বিষয় জানবো।
নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের কারণ
আমরা যারা পড়াশোনা করেছে তারা নিশ্চয়ই নবাব সিরাজউদ্দৌলা এ সম্পর্কে অনেকগুলো বিষয় জানি। অনকের পড়া অনেকদিন হয়ে যাওয়ার কারণে এই বিষয়গুলো ভুলে যাই। তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট এ সিরাজউদ্দৌলা নাটক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার সময় আমরা এখন নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের কারণ কী ছিল এ বিষয়ে সম্পর্কে জানব।
মোটামুটি আমরা অনেকেই জানি যে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের মূল কারণ ছিল তার নিকটস্থ দের বিশ্বাসঘাতকতা। তাহলে চলুন নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের কারণ সমূহ জেনে নেই। নবাব সিরাজউদ্দৌলা তার নানা নবাব আলীবর্দী খানের কাছ থেকে খুব অল্প বছর বয়সেই বাংলার নবাবের ক্ষমতা অর্জন করেন। তখন নবাব সিরাজউদ্দৌলার বয়স ছিল ২৩ বছর।
১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধে তার নিকটস্থ সেনাপতি মীর জাফর রায়দুর্লভ বিশ্বাসঘাতকতা করেন যার ফলে ২৩ জুন পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় ঘটে। এর মধ্য দিয়ে রবার্ট ক্লাইভের নেতৃত্বে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার শাসনভার গ্রহণ করে।
সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূলভাব
বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার সাথে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পলাশী নামক স্থানে যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল তাই এই যুদ্ধকে পলাশী যুদ্ধ বলা হয়। পলাশীর যুদ্ধ ১৭৫৭ সালের ২৩ সংঘটিত হয়েছিল। পলাশীর যুদ্ধে বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলা পরাজিত হয় এবং ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি শাসনকার্য শুরু করেন।
১৭৫৭ খৃস্টাব্দের ১২ জুন কলকাতার ইংরেজ সৈন্যরা চন্দননগরের সেনাবাহিনীর সঙ্গে মিলিত হয়।সেখানে দুর্গ রক্ষার জন্য অল্প কছু সৈন্য রেখে তারা ১৩ জুন অবশিষ্ট সৈন্য নিয়ে যুদ্ধযাত্রা করে। কলকাতা থেকে মুর্শিদাবাদের পথে হুগলি কাটোয়ার দুর্গ অগ্রদ্বীপ ওপলাশীতে নবাবের সৈন্য থাকা সত্ত্বেও তারা কেউ ইংরেজদের পথ রোধ করল না। নবাব বুঝতে পারলেন সেনাপতিরাও এই ষড়যন্ত্রে শামিল।
২৩ জুন সকাল থেকেই পলাশীর প্রান্তরে ইংরেজরা মুখোমুখি যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার জন্য প্রস্তুত হলো ১৭৫৭ সালের ২২ জুন মধ্যরাতে রবার্ট ক্লাইভ কলকাতা থেকে তাঁর বাহিনী নিয়ে পলাশী মৌজার লক্ষ্মবাগ নামে আম্রকাননে এসে তাঁবু গাড়েন। বাগানের উত্তর-পশ্চিম দিকে গঙ্গা নদী।
ইংরেজদের পক্ষে সাতজন ইউরোপিয়ান এবং ১৬ জন দেশীয় সৈন্য নিহত হয়। তখন কোন উপায় না দেখে সিরাজদ্দৌলা রাজধানী রক্ষা করার জন্য দুই হাজার সৈন্য নিয়ে মুর্শিদাবাদের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। কিন্তু রাজধানী রক্ষা করার জন্যেও কেউ তাঁকে সাহায্য করেনি।
সিরাজদ্দৌলা তাঁর সহধর্মিণী লুৎফুন্নেসা ও ভৃত্য গোলাম হোসেনকে নিয়ে রাজধানী থেকে বের হয়ে স্থলপথে ভগবানগোলায় পৌঁছে যান এবং সেখান থেকে নৌকাযোগেপদ্মা ও মহানন্দার মধ্য দিয়ে উত্তর দিক অভিমুখে যাত্রা করেন।
তাঁর আশা ছিল পশ্চিমাঞ্চলে পৌঁছাতে পারলে ফরাসি সৈনিক মসিয়ে নাস বিখ্যাত পর্তুগিজ ঐতিহাসিক বাকসার পৃথিবীর অন্যতম সেরা যুদ্ধগুলোর মধ্যে পলাশীর যুদ্ধ কে অন্তর্ভুক্ত করেন। অসংখ্য সৈনিক পলাশী যুদ্ধে মারা যায়। তারপরেও বাংলার স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা পলাশীর যুদ্ধে বিজয়ী হতে পারেননি। (সংগৃহীত)
নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল
নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল? ২৩ শে জুন ১৭৫৭ পলাশী যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিলেন বাংলার শেষ নবাব নবাব সিরাজউদ্দৌলা। এরপর নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে গ্রেপ্তার করা হয়। নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে গ্রেপ্তার করার পর ১৭৫৭ সালের ৩ জুলাই মীর জাফরের পুত্র এর নির্দেশে কারাগারেই সিরাজউদ্দৌলা কে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
নবাব সিরাজউদ্দৌলা কে হত্যা করে রক্তাক্ত লাশ হাতির পিঠে করে মুর্শিদাবাদ শহর ঘোরানো হয়। নবাব সিরাজউদ্দৌলার নানা আলীবর্দী খাঁ এর স্ত্রী যাকে লালন-পালন করেন মোহাম্মদী বেগ নবাব সিরাজউদ্দৌলা কে হত্যা করেছিলেন। তালওয়ার আর ছুরি দিয়ে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করা হয়েছিল।
ছুরি দিয়ে সিরাজউদ্দৌলা উপরে প্রথম আঘাত হানা হয়। এরপরে বাকিরা তালওয়ার দিয়ে সিরাজউদ্দৌলার ওপর এ হামলা চালায়। নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যুর সময় বয়স ছিল ২৫ বছর।
সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূল বিষয়বস্তু
সিরাজউদ্দৌলার নাটক সম্পর্কে অনেকগুলো বিষয় জানা গিয়েছে। আশা করি আপনি আমাদের পোষ্ট থেকে সিরাজউদ্দৌলা নাটক সম্পর্কে যেসব তথ্য পেয়েছেন সেগুলো আপনার বিভিন্ন রকম কাজে দেবে। সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূল বিষয়বস্তু জানা অত্যন্ত প্রয়োজন।
আলীবর্দী খান ছিলেন বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার নবাব। তিনি ১৭৪০-১৭৫৬ সাল পর্যন্ত তার শাসনকার্য চালিয়েছিলেন। আলীবর্দী খানের আসল নাম ছিল মির্জা মোহাম্মদ আলী। আলীবর্দী খান ১৭৫৬ সালের ১০ই এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন। নবাব আলীবর্দী খান এর কোন পুত্র সন্তান ছিল না তার তিনজন কন্যা সন্তান ছিল।
তাদের মধ্যে ঘষেটি বেগম অন্যতম। ঘষেটি বেগম এর আসল নাম ছিল মেহেরুন্নেসা। ঘষেটি বেগমের সেনাপতি হোসেন কুলি খা এর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক ছিল। এটা জানার পর আলীবর্দী খান নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে সেনাপতি হোসেন কুলি খাঁ হত্যা করার নির্দেশ করেন। নবাব সিরাজউদ্দৌলা তাকে হত্যা করে। সেই জন্য ঘষেটি বেগম তাঁর প্রতি প্রতিশোধ পরায়ন ছিলেন।
মীরজাফর এর আসল নাম ছিল মীর জাফর আলী খান। পলাশী যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেন। নবাব কে হত্যা করার পরে মীরজাফর ১৭৫৭ সালের ২৯ জুন ক্ষমতার আসনে বসেন। মৃত্যুর সময় তিনি কঠিন এবং জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন। যার ফলে তার পুরো শরীর পচে গিয়েছিল।
নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ কেউ থাকে ক্ষমতার আসনে দেখতে চান নি তিনি অল্প বয়সে ক্ষমতা অর্জন করবেন এটা কেউ সহ্য করতে পারেননি। যার ফলে সকলেই নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেন। এবং তাকে খুবই কৌশল করে যেহেতু নবাব সিরাজুদুল্লাহ সহজ-সরল ছিল এবং অনভিজ্ঞ ছিল তাই তাকে যুদ্ধে পরাজিত করেন এবং নির্মমভাবে হত্যা করেন।
শেষ কথাঃ সিরাজউদ্দৌলা নাটক – সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূল বিষয়বস্তু
এই আর্টিকেলে সিরাজউদ্দৌলা নাটক, সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূল বিষয়বস্তু, নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু কিভাবে হয়েছিল এসকল বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আশা করি আপনি আমাদের এই পোস্ট থেকে অনেকগুলো বিষয় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। যেহেতু এটা আমাদের বাংলার একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস। তাই আমাদের সকলের উচিত হবে এ সম্পর্কে জেনে রাখা।২০৭৯১
Post Comment