দক্ষিণ কোরিয়া কাজের ভিসা ২০২৪

দক্ষিণ কোরিয়া কাজের ভিসা ২০২৪

বিশ্বের টেকনোলজি ইনোভেশন সেক্টরে প্রথম সারিতে অবস্থান করতে দক্ষিণ কোরিয়া। তাই এই দেশের শিল্প খাত অনেক উন্নত এবং এদেশে শিল্পখাতে প্রচুর কাজের লোকের চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশের থেকে প্রতি বছর শিল্পখাতে (ইপিএস) বা এমপ্লয়মেন্ট  পারমিট সিষ্টেমের আওতায় সরকারি ভাবে কয়েক হাজার কর্মী দক্ষিণ কোরিয়াতে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। বায়োসেলের মধ্যমে সরকারি ভাবে ট্রেনিং প্রদান করে অতঃপর দক্ষিণ কোরিয়াতে সরকারিভাবে কাজের ভিসাতে পাঠানো হয়। 

বায়োসেল কতৃক, ২০২২ সালের আগষ্ট মাস অব্দি তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের থেকে গতবছরে ৩ হাজার ১৭০ জন কর্মীকে দক্ষিণ কোরিয়াতে পাঠানো হয়েছে। আর একই ধারাবাহিকতায় এই বছরেও অনেক কর্মীকে সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়াতে কাজের ভিসাতে পাঠানো হবে। তাই আপনারা যারা দক্ষিণ কোরিয়াতে কাজের ভিসাতে যেতে ইচ্ছুক তাদের জন্য আজকের কন্টেন্টটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। তাহলে চলুন দক্ষিণ কোরিয়া কাজের ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জেনে নেওয়া যাক।

দক্ষিণ কোরিয়া টাকার মান কত

টাকার মান নির্ভর করে ডলারের রেটের উপর। আর ডলার এর রেট যেহতু প্রতিনিয়তই কমে এবং বাড়ে তাই টাকার অ্যাকুরেট মান টা সুনিশ্চিত করে বলা টা কঠিন। তবে বাংলাদেশের টাকার মান দক্ষিণ কোরিয়ার টাকার মানের থেকে কয়েকগুণে বেশি। দক্ষিন কোরিয়ার কারেন্সি নাম হলো ওন। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের একটাকা সমান সাউথ কোরিয়ার ১২.৩৯ টাকা।

দক্ষিণ কোরিয়া বেতন কত ২০২৪ 

দক্ষিণ কোরিয়ার কাজের বেতন অনেক বেশি। মধ্যপাচ্যের সকল দেশের থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার একজন শ্রমিকের বেতন দ্বিগুন থেকে তিনগুণ হয়ে থাকে। দক্ষিণ কোরিয়াতে কর্মরত শ্রমিকদের তথ্য অনুসারে জানা যায় যে, দক্ষিণ কোরিয়াতে কাজ করে এমন ব্যক্তির বেতন সর্বনিন্ম প্রতিমাসে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা হয়ে থাকে। 
তাই একজন প্রবাসি চাইলেই অনায়াসে প্রতি মাসে ১ লাখ টাকা বাসায় পাঠাতে পারে। এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়াতে ওভারটাইম কাজ করার সুবিধাও রয়েছে। তাই একজন প্রবাসী ওভার টাইম করে প্রতি মাসে বেতন সহ ৩ লক্ষ টাকা ইনকাম করতে পারে। 
উল্লেখ্য, দক্ষিন কোরিয়ার প্রবাসিদের থাকার এবং খাওয়ার ব্যবস্থা কোম্পানি থেকেই করে দেয়।

দক্ষিণ কোরিয়া যেতে কত টাকা লাগে

দক্ষিণ কোরিয়ার ভিসার ধরণ এবং ভিসার মেয়াদকালের উপরে নির্ভর করে ভিসার খরচ কম বেশি হয়ে থাকে। নিন্মে একটি ছকের মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিনায় ভিসা ফি উল্লেখ করা হলোঃ 



ভিসার ধরন 

ভিসা ফি 

একক প্রবেশ ভিসা ৯০ দিন অব্দি 

৪০ মার্কিন ডলার 

একক প্রবেশ ভিসা ৯০ দিনের বেশি 

৬০ মার্কিন ডলার 

মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা 

৯০ মার্কিন ডলার 

এলিয়েন রেজিস্ট্রেশন কার্ড 

২৫ মার্কিন ডলার 

ডাবল এন্ট্রি ভিসা 

৭০ মার্কিন ডলার 

দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার নিয়ম

প্রতি বছর লটারির মাধ্যমে অনেক মানুষ দক্ষিণ কোরিয়াতে কাজের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায়। আর এই জন্য একটা আবেদন প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। নিন্মে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার নিয়ম ধাপে ধাপে উল্লেখ করা হলোঃ 

আবেদন করা

দক্ষিণ কোরিয়া যেতে হলে আপনাকে প্রথমে অনলাইনের মাধ্যমে বায়োসেলের ওয়েবসাইট থেকে আবেদন করতে হবে। সাধারনত এই আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয় প্রতিবছর মার্চ থেকে এপ্রিল এই সময়ে। আপনাদের সুবিধার্তে আবেদনের লিংক দিয়ে দেওয়া হলোঃ


আবেদন লিংকঃ “এখানেই”

ভাষা শেখা 
লটারিতে যদি আপনার নাম আসে তাহলে আপনি দুই মাস সময় পাবেন কোরিয়ান ভাষা শেখার জন্য। এই দুই মাসের মধ্যেই ভাষা শিখতে হবে।


পরীক্ষা দেওয়া


দুই মাস পরে আপনাকে পরীক্ষা নেওয়া হবে। পরিক্ষা হবে ২০০ মার্কের মধ্যে এদের মধ্যে ১০০ হবে রিডিং এবং ১০০ হবে লিসেনিং এবং পরীক্ষার সময় হবে ৫০ মিনিট। আপনি যদি ভাষার পরীক্ষাউ উত্তীর্ণ হন তাহলে আপনাকে স্কিল পরিক্ষার জন্য ডাকা হবে এবং আপনাকে কিছু কাজ করতে দেওয়া হবে।


এদের মধ্যে, থাকবে, মেশিনের রিং লাগানো , শারিরিক সুস্থতা পরীক্ষা এবং যক্ষা এবং হাপাটিটিস বি রোগের পরীক্ষা। আপনি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে আপনাকে স্বাস্থ্য পরিক্ষার সার্টিফিকেট এবং পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে হবে। 


ভিসার আবেদন জমা দেওয়া 

আপনার সকল পরীক্ষা শেষ হলে আপনাকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে দূতাবাসে গিয়ে বায়োসেলের মাধ্যমে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। আপনার কাগজপত্র ঠিক থাকলে তারা ৬ সপ্তাহের মধ্যেই আপনার ভিসা কনফার্ম করবে।

দক্ষিণ কোরিয়া কাজের ভিসা

দক্ষিণ কোরিয়াতে কাজের ভিসার মাধ্যমে কয়েকটি সেক্টরে বাংলাদেশ থেকে সরকারি ভাবে লোক পাঠানো হচ্ছে। বায়োসেলের সহকারী মহাব্যবস্থাপকের মতে, বাংলাদেশ থেকে মুলত দক্ষিন কোরিয়াতে উৎপাদন খাতে নিয়োজিত। আর এই সকল খাত গুলো হলো পনির ও খাদ্যপণ্যশিল্প, কাগজশিল্প,প্লাস্টিকশিল্প, ইলেকট্রিক এবং ইলেকট্রনিক্স শিল্প, মেশিনারিজ ইত্যাদি।

বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ কোরিয়া যেতে কত টাকা লাগে

বাংলাদেশ থেকে আপনি যদি কাজের উদ্দেশ্যে যেতে চান তাহলে আপনি খুব অল্পখরচেই দক্ষিণ কোরিয়া যেতে পারবেন। বায়োসেলের মাধ্যমে খুবই স্বল্প খরচে বর্তমানে সরকারিভেবে দক্ষিণ কোরিয়াতে পাঠানো হচ্ছে। বায়োসেলের মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়া যেতে সকল সার্ভিস চার্জ সহ খরচ হয় ৩৩ হাজার ৫২৪ টাকা।

এর মধ্যে ২৩ হাজার ১৮৪ টাকা বায়োসেলের সার্ভিস চার্জ যা ভ্যাট সহ, ভিসা ফি ৫০০০ হাজার ১০০ টাকা, ট্যাক্স বাবদ ৮০০ টাকা, স্মার্ট কার্ডের ফি বাবদ ২৫০ টাকা, বিমা ফি বাবদ ৪৯০ টাকা, নিবন্ধন ফি ২০০ টাকা এবং জনকল্যাণ তহবিল ফি বাবদ ৩ হাজার ৫০০ টাকা।  
 

দক্ষিণ কোরিয়া কেমন দেশ

দক্ষিণ কোরিয়া এশিয়ার উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় অবস্থিত একটি দেশ। এটি কোরীয় উপদ্বীপের দক্ষিণ অংশ নিয়ে গঠিত। দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানীর নাম হলো সিওল। দক্ষিণ কোরিয়ার মোট আয়তন হলো ৯৯ হাজার ৩৯২ বর্গকিলোমিটার।
২০১৮ সালের দেশটির আদমশুমারির হিসেব অনুযায়ী দেশটিতে মোট জনসংখ্যার পরিমাণ হলো ৫ কোটি ১৪ লক্ষ যার মধ্যে দেশটির সিওল শহরেই বাস করে ১ কোটির ও বেশি মানুষ। দেশটির প্রধান ভাষা হলো কোরিও ভাষা দেশটির জনগ্ণ ও এই ভাষাতেই কথা বলে।  

দক্ষিণ কোরিয়া স্টুডেন্ট ভিসা খরচ

চাকরির পাশাপাশি অনেকই পড়শোনার জন্য দক্ষিণ কোরিয়া গিয়ে থাকেন। দক্ষিণ কোরিয়াতে স্টুডেন্ট ভিসার ফি নির্ভর করা আপনি কোন ভিসাতে দক্ষিণ কোরিয়া যাচ্ছেন সেটার উপরে। দক্ষিণ কোরিয়া স্টুডেন্ট ভিসা ফি ৪৫ মার্কিন ডলার। এবং আপনার সব মিলিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া স্টুডেন্ট ভিসার জন্য খরচ হবে প্রায় ৭ লক্ষ টাকা।
উল্লেখ্য, আপনার যদি IELTS স্কোর ভালো থাকে এবং সেই সাথে আপনার যদি রেজাল্ট ভালো থাকে এই খরচ আরো কমে আসবে। তবে একটা বিষয় জানিয়ে রাখা ভালো দক্ষিণ কোরিয়াতে পড়াশোনা করার জন্য IELTS এর রেজাল্ট বাধ্যতামুলক না। অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়েই IELTS এর রেজাল্ট দরকার হয় না। 

 পরিশীষ্ট

দক্ষিণ কোরিয়াতে কাজের ভিসাতে যাওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই দক্ষিণ কোরিয়ার ভাষাতে দক্ষতা অর্জন করতে হবে এবং সেই সাথে সংশ্লিষ্ট কাজে অভিজ্ঞ হতে হবে। এতে করে আপনি খুব সহজেই দক্ষিণ কোরিয়া গিয়ে অনায়াসেই প্রতি মাসে ৩ লাখ টাকা ইনকাম করতে পারবেন। 
আশা করি আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে দক্ষিন কোরিয়ার কাজের ভিসা সম্পর্কে সকল বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন সেই সাথে আবেদন প্রক্রিয়া এবং ভিসা খরচ ইত্যাদি বিষয়েও জানতে পারছেন। এর পরেও যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই তা কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন।

FAQ

কোরিয়াতে ২০২৪ সালে বেসিক কত?

উত্তরঃ কোরিয়াতে ২০২৪ সালের বেসিক বেতন হলো ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। কোম্পানির উপর ভিত্তি করে এই বেতনের কম বা বেশি হতে পারে। 

কোরিয়ায় কোন চাকরির বেতন বেশি

উত্তরঃ কোরিয়াতে শিল্পখাতের অন্তভুক্ত যেমন, ইলেকট্রিক, ইলেকট্রনিক্স, মেটাল শিল্প এবং টেক্সটাইল খাতের চাকরিগুলার বেতন বেশি। 

কোরিয়াতে ২০২৪ সালে বেসিক কত?

উত্তরঃ কোরিয়াতে ২০২৪ সালের বেসিক বেতন হলো ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। কোম্পানির উপর ভিত্তি করে এই বেতনের কম বা বেশি হতে পারে। 

কোরিয়ায় কোন চাকরির বেতন বেশি

উত্তরঃ কোরিয়াতে শিল্পখাতের অন্তভুক্ত যেমন, ইলেকট্রিক, ইলেকট্রনিক্স, মেটাল শিল্প এবং টেক্সটাইল খাতের চাকরিগুলার বেতন বেশি। 

Post Comment

You May Have Missed