আনঅফিসিয়াল ফোন নিবন্ধন করার নিয়ম ২০২৪

আনঅফিসিয়াল ফোন নিবন্ধন করার নিয়ম ২০২৪


হ্যালো বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন । বাংলাদেশে অনেকেই কম দাম হাওয়ার কারনে আনঅফিসিয়াল ফোন ক্রয় করে থাকি । কিন্তু আপনি কি জানেন আনঅফিসিয়াল অফিসিয়াল করতে হলে কি কি করতে হবে । আজকের আর্টিকেল টিতে আমি এই বিষয়ে আলোচনা করবো ।



বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (BTRC) ২০২৩ সালের ৩০ জুন থেকে দেশে বিদেশ থেকে আমদানি করা আনঅফিসিয়াল মোবাইল ফোন বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে/শর্তে আনঅফিসিয়াল মোবাইল ফোন নিবন্ধনের সুযোগ করে দিচ্ছে বিটিআরসি।

আনঅফিসিয়াল ফোন অফিসিয়াল করার নিয়ম নিম্নরূপ:

অনলাইনে নিবন্ধন

  • neir.btrc.gov.bd ওয়েবসাইটে যান।
  • ব্যক্তিগত একাউন্ট তৈরি করুন।
  • Special Registration সেকশনে যান।
  • মোবাইল ফোনের IMEI নম্বর প্রদান করুন।
  • প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টের ছবি/স্ক্যান কপি আপলোড করুন।
  • Submit বাটনে ক্লিক করুন।

প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট

বিদেশ থেকে মোবাইল ফোন আমদানী করা হলে:

  • পণ্য ক্রয়ের রশিদ/চালান পত্র
  • পাসপোর্টে ভিসার কপি
  • ইমিগ্রেশন কপি

আনঅফিসিয়াল ফোন নিবন্ধনের জন্য বিটিআরসি নির্দিষ্ট ফি আহ্বান করে থাকে। বর্তমানে আনঅফিসিয়াল ফোন নিবন্ধনের জন্য ফি ১০০০ টাকা। তবে, উপহার হিসেবে প্রাপ্ত মোবাইল ফোন নিবন্ধনের জন্য ফি ৫০০ টাকা।

আনঅফিসিয়াল ফোন নিবন্ধনের জন্য ১০ দিনের সময়সীমা নির্ধারিত থাকে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে না পারলে ফোনটি পরীক্ষাকালীন সময়ের জন্য নেটওয়ার্কে সচল থাকবে। পরীক্ষাকালীন সময় শেষে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অফিসিয়াল ফোন চেনার উপায়

অফিসিয়াল ফোন হল সেই ফোন যা বাংলাদেশ সরকারের আওতাধীন বিটিআরসি এর অনুমোদনকৃত এবং সরকারকে ট্যাক্স ও ভ্যাট প্রদান করে আমদানি করা হয়। অফিসিয়াল ফোন চেনার উপায় হলঃ

  • প্রথমে আপনার মোবাইলের ১৫ ডিজিটের IMEI নম্বরটি জেনে নিন। এর জন্য আপনার মোবাইলে ডায়াল করুন *#06#।
  • তারপর আপনার মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করুন KYD [স্পেস] ১৫ ডিজিটের IMEI নাম্বার, তারপর পাঠিয়ে দিন 16002 নাম্বারে।
  • কিছুক্ষণের মধ্যে আপনাকে ফিরতি এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে আপনার হাতে থাকা ফোনটি অফিসিয়াল নাকি আনঅফিসিয়াল।

আনঅফিসিয়াল ফোন ব্যবহার করলে কি কি সমস্যা হতে পারে

আনঅফিসিয়াল ফোন ব্যবহার করার আগে এই বিষয় গুলো অবশ্যই জেনে নিন । কারনে ফোন ক্রয় করার পর ফোন বন্ধ হয়ে গেলে আপনার সমস্যা হতে পারে । নিচের বিষয় গুলো জেনে নিন । 

  • ফোনটি অকার্যকর হতে পারে। আনঅফিসিয়াল ফোনগুলি প্রায়ই নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে তৈরি হয় এবং এগুলিতে প্রায়ই ত্রুটি থাকে। ফলে, ফোনটি অকার্যকর হয়ে যেতে পারে।
  • ফোনটিতে ম্যালওয়্যার থাকতে পারে। আনঅফিসিয়াল ফোনগুলি প্রায়ই ম্যালওয়্যার দিয়ে সংক্রামিত থাকে। ম্যালওয়্যার ফোনের ক্ষতি করতে পারে, ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করতে পারে বা এমনকি ফোনটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
  • ফোনটিতে নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকতে পারে। আনঅফিসিয়াল ফোনগুলিতে প্রায়ই নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকে। ফলে, ফোনটি হ্যাক করা সহজ হতে পারে।
  • ফোনটিতে ওয়ারেন্টি থাকবে না। আনঅফিসিয়াল ফোনগুলিতে প্রায়ই ওয়ারেন্টি থাকে না। ফলে, ফোনে কোনো সমস্যা হলে তা মেরামত বা প্রতিস্থাপন করা যাবে না।
  • ফোনটিতে সরকারি ট্যাক্স পরিশোধ করা হবে না। আনঅফিসিয়াল ফোনগুলিতে প্রায়ই সরকারি ট্যাক্স পরিশোধ করা হয় না। ফলে, এটি অবৈধ এবং আইনি ব্যবস্থার সম্মুখীন হতে হতে পারে।

এছাড়াও, আনঅফিসিয়াল ফোনগুলি প্রায়ই বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) দ্বারা অনুমোদিত হয় না। ফলে, এই ফোনগুলিতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য থাকতে পারে না।

বিদেশ থেকে ফোন আনার নিয়ম

বিদেশ থেকে ফোন আনতে হলে বাংলাদেশ সরকারের “প্যাসেঞ্জার ব্যাগেজ রুলস-২০১৬” অনুসরণ করতে হবে। এই নিয়ম অনুযায়ী, একজন যাত্রী নিজের ব্যবহৃতসহ সর্বোচ্চ ২টি মোবাইল ফোন শুল্কমুক্ত হিসেবে আনতে পারবেন। এছাড়াও শুল্ক-করাদি পরিশোধ করে মোবাইল আনতে পারবেন সর্বোচ্চ ৮টি।

শুল্কমুক্তভাবে মোবাইল আনতে হলে নিম্নলিখিত নিয়মগুলি মেনে চলতে হবে:

  • ফোনটি অবশ্যই ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য হতে হবে।
  • ফোনটি অবশ্যই বিমানবন্দর বা বন্দরে কাস্টমস কর্মকর্তাদের কাছে দেখাতে হবে।

শুল্ক পরিশোধ করে মোবাইল আনতে হলে নিম্নলিখিত নিয়মগুলি মেনে চলতে হবে:

  • ফোনটির মূল্য বিমানবন্দরে কাস্টমস কর্মকর্তাদের কাছে দেখাতে হবে।
  • ফোনটির মূল্যের উপর নির্ভর করে শুল্ক পরিশোধ করতে হবে।

বিদেশ থেকে ফোন আনার ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মনে রাখতে হবে:

  • ফোনটি অবশ্যই বৈধভাবে আমদানি করা হতে হবে।
  • ফোনটি অবশ্যই বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) দ্বারা অনুমোদিত হতে হবে।
  • ফোনটি অবশ্যই বিটিআরসির ডেটাবেসে নিবন্ধিত হতে হবে।

বিটিআরসির ডেটাবেসে মোবাইল ফোন নিবন্ধন করতে নিম্নলিখিত পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে:

  • বিটিআরসির ওয়েবসাইটে গিয়ে “মোবাইল ফোন নিবন্ধন” অপশনটি নির্বাচন করতে হবে।
  • প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করতে হবে।
  • নিবন্ধন ফি প্রদান করতে হবে।

মোবাইল ফোন নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যগুলি হলো:

  • আপনার নাম
  • আপনার পাসপোর্ট নম্বর
  • আপনার পাসপোর্টে ইমিগ্রেশন কর্তৃক প্রদত্ত আগমনের সিল সম্বলিত পাতা এর স্ক্যান/ছবি
  • মোবাইলের IMEI নম্বর

শেষ কথা 

আশা করি সবাই আনঅফিসিয়াল ফোন নিবন্ধন করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারেছেন আর্টিকেল টি পরে । আরেকটি কথা আনঅফিসিয়াল ফোন কেনার আগে সাবধান থাকবেন এবং অফিসিয়াল ভাবে নিবন্ধন করে নিবেন । আজ এই পর্যন্ত বন্ধুরা । 


 

Post Comment

You May Have Missed